কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য্যের কবিতায়-
" ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়, পূর্ণিমা চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি"
(Image)(https://images.app.goo.gl/zS5wWcZDugWsQCqXA)
পৃথিবীর সবচেয়ে আদিম, অকৃত্রিম এবং মৌলিক শব্দ ‘ক্ষুধা’ বললে অত্যুক্তি হবে না। ক্ষুধা এমন এক অনুভূতি যার সঙ্গে কোনো শব্দের তুলনা হয় না। ক্ষুধার্ত ব্যক্তির কাছে পৃথিবীর সবকিছু তুচ্ছ। ক্ষুধার্ত মানুষের অন্তর্দৃষ্টি খাদ্য ছাড়া আর কিছুই দেখতে পায় না, এই ধরনি তার কাছে নীরস গদ্যময়। তাই তো দূর আকাশের পূর্ণিমার চাঁদটা আগুনে ঝলসানো রুটি মনে হয়। ক্ষুধিত মানুষের হাহাকারে বস্তুবাদী কবি কল্পনার স্বপ্নলোক ত্যাগ করে বাস্তবের রুঢ় জগতে দৃষ্টিপাত করে। তখন তার মনে জীবনে পদ্য নেই, আছে শুধু রুটি। একখানা আস্ত রুটি কল্পনার মোমের ঘরে তাই আঘাত হানে।
চাদঁ, ফুল, পাখি, নদী প্রাকৃতিক কোন সৌন্দর্য অনাহারীকে মোহে আচ্ছন্ন করতে পারে না। এই সৌন্দর্য তার কাছে অর্থহীন ও উপহাসব্যন্ঞক। পৃথিবী তার চোখে কাব্যহীন, ছন্দহীন। সৌন্দর্য বস্তুতে নেই, আছে দ্রষ্টার মনে ও বোধে।
(Image)(https://images.app.goo.gl/jg3FKPA2ZUk6mv8k7)
(Image)(https://images.app.goo.gl/9yhcxEqEPntNYSNSA)
ক্ষুধার জ্বালা ভুলিয়ে দেয় সমস্ত দ্বিধাবোধ। ক্ষুধা নিবারনে এতটাই উৎকন্ঠা হয় তখন যেন দুর্গন্ধময় খাবার ও স্বাদে অতুলনীয়। খাবারের পরিছন্নতা খুজঁতে যাওয়া অনাহারীর জন্য তখন বিলাসীতা। দারিদ্রের দুর্বিষহ অভিশাপ ক্ষুধার্ত মানুষের উচছলতায় প্রাণস্ফূর্তি হরন করে। তাদের চারপাশ কেবল অভাব-অনটন। দারিদ্রের নির্মম কষাঘাত মানুষের দৃষ্টি ও হৃদয় থেকে রূপ সৌন্দর্য ও প্রেমের নান্দনিক বোধ গুলোকে ধ্বংস করে দেয়।
(Image)(https://images.app.goo.gl/WMYA4Ru35qfmGeSF6)
'বিশ্ব ক্ষুধা সূচক -২০২১' এ ১১৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৭৬তম। ধনতান্ত্রিক সভ্যতার তৈরি করা কৃএিম সংকট মানুষের মুখ থেকে কেড়ে নিয়েছে ক্ষুধার অন্ন। তবুও উন্নয়ন পিছিয়ে নেই।
ক্ষুধা সকল শিল্পের শিক্ষক, সকল আবিষ্কারের আবিষ্কারকর্তা। ক্ষুধা একাধারে মানুষের বন্ধু এবং শক্র, ক্ষুধার তৃপ্তির জন্য মানুষ বাঁচে আবার ক্ষুধার তাড়নায়ই মানুষ সকল প্রকার দুষ্কর্মে নিয়োজিত হয়। নীতি নৈতিকতা তার কাছে অর্থহীন। তার কাছে সবকিছুই মূল্যহীন কেবল খাদ্য ব্যতিত। দুমুঠো অন্নসংস্হানের জন্য যাদের জীবন বিপর্যস্ত, তাদের কাছে পৃথিবী অত্যন্ত কর্কশ ও কঠিন। তাদের অনুভূতি গুলো লুকিয়ে যায় কোন এক আড়ালে আর বিবেকের মৃত্যু ঘটে। অপরাধ জগতে পা রাখা তখন সময়ের ব্যবধান কেবল। পার্থক্য থাকে না শিক্ষিত ও অশিক্ষিতর মাঝে। ক্ষুধার জ্বালা তো একি! ক্ষুধার তাড়নার কাছে বিবেক হেরে যায় বার বার।
সর্বোপরি ক্ষুধা নিবারন মৌলিক চাহিদা। একবিংশ যূগে অনাহারীর প্রতি সভ্যতার আড়ালে অদৃশ্য দেয়াল তোলা মানবতা কাম্য নয়।
মেডিকেলের বই এ পড়ি যে দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকলে পাকস্থলীর পেশীর সংকোচন হয় আর এতেই পেটে ব্যাথা লাগে যাকে আমরা বলি ক্ষুদা লাগা।কত সিম্পল একটা বেপার মনে হয় তখন।কিন্তু এই ক্ষুদা মেটানোর জন্যই পৃথিবী গতিশীল,সবাই এই ক্ষুদা মেটানোর জন্য ছুটছে।
যুক্তরাজ্যের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক গবেষণা করে দেখেছিলেন,ক্ষুদা পেটে কখনও মানুষ সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।
পেটে ক্ষুদা থাকলে শরীরের আর অন্য কোন অঙ্গই তেমন কাজ করে না,এমনিক মস্তিষ্কও কাজ করা বন্ধ করে দিতে থাকে।
এজন্যই তো ক্ষুধার্ত মানুষের কাছে বুদ্ধি, বিবেচনা আশা করা বোকামি ছাড়া কিছুই না। ধন্যবাদ আপনাকে।
Congratulations @mituabida! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s):
Your next target is to reach 100 posts.
You can view your badges on your board and compare yourself to others in the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word
STOP
To support your work, I also upvoted your post!
Check out the last post from @hivebuzz:
Support the HiveBuzz project. Vote for our proposal!
বাঙালিরা আর যাই হোক মনে হয় না ক্ষুধা সহ্য করতে পারে। কারণ আমরা বেশ ভোজন রসিক মানুষ। কিন্তু পৃথিবীর কিছু কিছু ছবি আমাদেরকে ভিন্ন ছবি তুলে ধরে। অনেক সময় আমরা অযথাই নিজের খাবার নষ্ট করি। অথবা রেস্টুরেন্টে গিয়ে হাজার হাজার টাকা শুধুমাত্র নিজেদের বিলাসিতা পূরণ করার জন্য খরচ করি। কিন্তু এমন মানুষ রয়েছে যারা দিনে একবেলাও ঠিকমতো খেতে পায় না। আমি বিভিন্ন আর্টিকেল পড়েছিলাম যেখানে দেখেছিলাম ক্ষুধার্ত মানুষগুলো কতটা অসহায় নিজের কাছে। খুব ভালো লিখেছেন।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপু আপনাকে। পরবর্তীতে Image source এর বিষয়টা খেয়াল রাখব।🙂🙂